শনিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:০৬ পূর্বাহ্ন
জগন্নাথপুর নিউজ ডেস্ক: সনামগঞ্জে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ কাজের চূড়ান্ত বিল পরিশোধের দাবিতে মানববন্ধন করেছে জেলার সবকটি উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য ও সভাপতি ,কৃষক সহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ।
সোমবার (২৭ জুলাই) দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয় চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় জেলার ছোট বড় ৫২ টি হাওরে ফসল রক্ষা বাধ নির্মাণ করা হয়। হাওরপাড়ের কৃষক ও সুবিধাভোগী জনগণের অংশ গ্রহণে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রশাসনের তদারকিতে নির্মাণ করা হয় ফসল রক্ষা বাঁধ। কাবিটা নীতিমালা অনুযায়ী বাঁধ নির্মাণের কাজের শুরুতে অগ্রিম বিল প্রদান করা হলেও কাজ বাস্তবায়নের সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি বিল না পাওয়ায় ধার দেনা,জমি সম্পত্তি বন্ধক রেখে টাকা সংগ্রহ করে বাঁধ নির্মাণের কাজ শেষ করেছেন। মার্চ মাসের ২০ তারিখে বাঁধ নির্মাণের কাজ শেষ হলেও আজ পর্যন্ত পিআইসি গুলোকে চূড়ান্ত কাজের বিল প্রদান করা হয়নি। চূড়ান্ত বিল না পাওয়ায় প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সদস্যরা বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন। চূড়ান্ত বিল না পেলে আগামীতে হাওড়ে পিআইসি পদ্ধতিতে ফসল রক্ষা বাধ নির্মাণের কাজে নিরুৎসাহিত হবে এবং বাঁধ নির্মাণের কাজে প্রতিবন্ধকতা শুরু হবে সরকারের উন্নয়নের ধারাকে ব্যাহত করবে। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আমরা হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের কাজ করার জন্য দিনেরাতে বাঁধে পড়ে থেকে কাজ সম্পন্ন করেছি। আজ বিলের জন্য আমাদের মানববন্ধন করতে হচ্ছে। আজকে চূড়ান্ত বিলের টাকা না পাওয়ায় শ্রমিকদের মুজুরি দিতে পারছিনা। শ্রমিকরা পিআইসি গুলোর পিছু পিছু ঘুরছে কিন্তু পাওনা টাকা দিতে পারছেন না তারা। পিআইসির সদস্যরা অনেকে ঋণ করে টাকা সুদে এনে বাধ নির্মাণের কাজ শেষ করেছেন তাদের পাওনা টাকা পরিশোধ করতে না পারলেও আরও বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হবে। মানববন্ধনে জগন্নাথপুর, জামালগঞ্জ, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, সুনামগঞ্জ সদর, ধর্মপাশা, দিরাই, শাল্লা, দোয়ারাবাজারসহ সবকটি উপজেলার দুই শতাধিক প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য অংশগ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য চলতি বছর পানি উন্নয়ন বোর্ড জেলার শনির হাওর, মহালিয়ার হাওর, নলুয়া হাওর, মই হাওর, পাগনার হাওর, মাতিয়ান হাওর, হালিরহাওর, গুরমার হাওর, সোনামোড়ল হাওর, ধানকুনিয়ার হাওর, বরাম হাওর, কালিয়াকোটা হাওর, ছায়ারহওরসহ ছোট বড় ৫২ টি হাওরে ৭৪৫টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির মাধ্যমে ৬৩৬ কিলোমিটার ফসল রক্ষা বাধ ও ১৩৯টি ক্লোজার নির্মাণ করা হয়। এজন্য ১৩২ কোটি টাকা বরাদ্দের মধ্যে পিআইসির অনুকূলে ৮২ কোটি ৮৮ লাখ টাকা ছাড় দেয়া হয়। জেলায় মোট ১৬৮০ কিলোমিটার ডুবন্ত বেড়িবাঁধ রয়েছে। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন পিআইসির সদস্য রফিকুল বারী চৌধুরী বাচ্চু, সালাহ উদ্দিন মাহতাব, সেলিম রেজা, বিপ্লব কান্তি সরকারসহ বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও সেক্রেটারিগণ। এখন পর্যন্ত তারা ২০ কোটি টাকার চূড়ান্ত বিল পাবেন বলে দাবি করেন। চলতি বছরের জেলায় ২ লাখ ২০ হাজার ৪৩ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছিলো। ৭ লাখ ৭৩ হাজার ৬২৬ মেট্রিকটন চাল উৎপাদিত হয়েছে।
Leave a Reply